রোববার সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রী তাওফিক ফাউযান আল রাবিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মূলত বাংলাদেশের প্রস্তাবিত সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়, এবং সৌদি আরব এ প্রস্তাবে সম্মতি প্রদান করে। তবে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের আগে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের পক্ষ থেকে হজযাত্রীদের জন্য সমুদ্রপথ ব্যবহারের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রী তা নিয়ে কোনো আপত্তি নেই বলে জানান। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জাহাজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও, হজযাত্রীদের ভ্রমণের সময় তাদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত পোষণ করেন।
এছাড়া, বৈঠকে হজযাত্রীদের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতির হালনাগাদের বিষয়ে আলোচনা হয়। সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রী তাওফিক ফাউযান আল রাবিয়া বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেন যে, হজযাত্রীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহারের পদ্ধতি আরও উন্নত করা হবে। এছাড়া, তিনি ধর্ম উপদেষ্টাকে নিশ্চিত করেন যে, হজ এজেন্সির মালিক বা তাদের প্রতিনিধিদের জন্য মুনাজ্জেম (মাল্টিপল) ভিসা ইস্যু করার ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল হজযাত্রীদের লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে বেশ কয়েকজন হজযাত্রীর লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সৌদি মন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানান, রুট টু মক্কা কর্মসূচির আওতায় এ সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে হজযাত্রীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হন।
এ বছর সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি এজেন্সিকে কমপক্ষে ২ হাজার হাজি পাঠানোর কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে, ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন ২০২৪ সালের মতো এজেন্সিপ্রতি কোটা ২৫০ জনে নামিয়ে আনার অনুরোধ করেন। সৌদি মন্ত্রী এ অনুরোধ বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও সহযোগিতা করেন হজ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার হাসান আল মানাখেরা এবং হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বদর আল সেলামি। এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ব্রিগেডিয়ার রাকিবুল্লাহ, জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ মঈনুল কবির এবং জেদ্দা হজ মিশনের কাউন্সেলর জহিরুল ইসলাম।
এই বৈঠকটি ছিল ভবিষ্যতে হজযাত্রীদের সুবিধার্থে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠানোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের হজযাত্রীরা আরও সহজে ও কম খরচে হজ পালন করতে সক্ষম হবেন।